শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে শরিফুল ইসলাম নামের যুবকের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধারের তিন দিনেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) আসামি ফারজানা আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে এ বক্তব্য দিয়েছেন বলে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) হাসিবুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ৯ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ১১টায় শ্বশুরবাড়িতে যান শরিফুল। ফারজানা ওইদিন রাত তিনটার দিকে শরিফুলকে প্রতারণার মাধ্যমে নদীর পাড়ে নিয়ে যান এবং কবিরাজের বরাত দিয়ে বলেন হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নদীর স্রোতের পানি তুলে পান করলে শারীরিক অক্ষমতা দূর হবে। শরিফুল তাতে সায় দিলে তার পরনের লুঙ্গি ছিঁড়ে হাত ও পা বেঁধে দেন ফারজানা। এরপর একটি প্লাস্টিকের বোতল হাতে নিয়ে নদীর স্রোতের পানি তুলতে গেলে ফারজানা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং ঘাড় চেপে ধরেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ফারজানার হাতে কামড় বসিয়ে দেন শরিফুল। এ সময় ফারজানা ক্ষিপ্ত হয়ে শরিফুলের ঘাড় ভেঙে দেন।
পরে শরিফুলের মৃত্যু নিশ্চিত হলে ফারজানা শরিফুলের মৃতদেহ পাশেই থাকা একটি শ্যালো নৌকার নিচে ঢুকিয়ে দেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার চার দিন পর শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় পার্শ্ববর্তী শিবরামপুর গ্রামের করতোয়া নদীর পোলঘাটে মরদেহ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করার পর শরিফুলের মা ও পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেন। ওইদিনই স্ত্রী ফারজানাসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা সূর্য বানু বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নামে মামলা দায়ের করেন।
তবে জবানবন্দিতে ফারজানার দেয়া বক্তব্য অনেকেই মানতে নারাজ। তাদের ধারনা, এ ঘটনায় ফারজানার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে। একজন মেয়ের পক্ষে একা এমন লোমহর্ষক হত্যাকান্ড ঘটানো সম্ভব হয়েছে কিনা সেটাও ভালো করে তদন্ত করার আহবান স্থানীয়দের।
উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নিখোঁজ হওয়ার চারদিন পর গত শনিবার করতোয়া নদীতে ভাসমান অবস্থায় শরিফুল ইসলামের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দৈনিক আজকের খবর
Leave a Reply