রাবি প্রতিনিধিঃ
আগামী ২৯ মে থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হচ্ছে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক শ্রেনীতে ভর্তি পরীক্ষা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েল প্রস্তুতি এবং পরীক্ষা ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তা ও সংশ্লিস্ট বিষয়ে সাংবাদিকদের জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।
তিনি জানান, এ বছর এ বি সি তিন ইউনিটে বিশেষ কোট সহ মোট আসন রয়েছে ৪ হাজার ৪৬৭টি। এর বিপরীতে চূড়ান্ত আবেদন জমা হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৯১টি। একক আবেদন কারীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪১৬টি। প্রতিটি পরীক্ষা ১ ঘন্টা ব্যাপী এমসিকিউ পদ্ধতিতে গ্রহণ করা হবে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে মোবাইল ফোন সহ যে কোন ইলেক্ট্রোনিক ডিভাইস পরীক্ষা হলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যে কোন ধরনের জালিয়াতি রোধে তৎপর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এই তিন দিনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী সহ অভিভাবকদের সাময়িক কষ্টের কথা বিবেচনায় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে উপাচার্য বলেন, চেষ্টা করা হচ্ছে সামনে বছর থেকে পরীক্ষার কেন্দ্র গুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির মতো বিভাগে বিকেন্দ্রীকরনের।
এদিকে, রাবি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিশেষ কোটার জন্য ৫৩৭ আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় কোটাবাদে আসন রয়েছে ৩ হাজার ৯৩০টি। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাবিতে কেবল কোটাতেই বরাদ্দ রাখা হয়েছে আসনের প্রায় ১২ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য আসন রয়েছে ৬১টি, (প্রতিটি বিভাগ থেকে দুটির বেশি নয়), শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য ১২২টি (প্রতিটি বিভগ থেকে ২টির বেশি নয়), মুক্তিযোদ্ধার পুত্র/কন্যা, নাতি/নাতনিদের জন্য প্রতি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের আসন সংখ্যা ৫ শতাংশ।
রাবিতে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পুত্র/কন্যাদের জন্য প্রতি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের আসন সংখ্যা চার শতাংশ এবং বিকেএসপি কোটায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিভাগে নির্ধারিত আসন সংখ্যার ১০ শতাংশ।
তবে বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে ভর্তি পরীক্ষায় নির্ধারিত পাশ মার্কের চেয়ে কম পেয়েও কোটায় ভর্তি হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, নির্ধারিত পাশ মার্ক ছাড়া এ বছর কেউ ভর্তি হতে পারবে না। গত বছরের তুলনায় এ বছর পোষ্য কোটা ১ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষে কোটায় আসন পূরণ না হওয়ার ভর্তি পরীক্ষার মূল কমিটি ও উপকমিটির বিশেষ সুপারিশে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছিল। তবে এ বছর সেই সুযোগটি থাকছে না। পাশ করেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ অর্জন করতে হবে।
অপরদিকে, ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে যানবাহন চলাচলে সাত নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। এতে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন যানবাহন চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো- রাবি ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন দিনগুলোতে (২৯, ৩০ ও ৩১ মে) সকাল সোয়া ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো আগের নির্ধারিত স্থান থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে এবং বিকেল সোয়া ৫টায় নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে আবারও ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাবে। তবে ৩১ মে বাসগুলো সোয়া ৫টার পরিববর্তে পৌনে ৩টায় ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাবে; এ সময় কাজলা ও বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করা ব্যক্তিগত গাড়ি এবং অন্যান্য যানবাহনগুলো মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কৃষি ও চারুকলা অনুষদে যাওয়ার ক্ষেত্রে (মন্নুজান হল বেগম খালেদা জিয়া হল-স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন-তুঁত বাগান) সংলগ্ন রাস্তাটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে; শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা সব রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে।
ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য সকাল ৮টায় একাডেমিক ভবনগুলোর গেট খুলে দেওয়া হবে; সকাল সাড়ে ৭টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলোর দিকে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটর-সাইকেল এবং অটোরিকশাসহ কোনো প্রকার যানবাহন প্রবেশ করবে না। তবে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলো (উপাচার্য, উপ-উপাচার্যদ্বয়, প্রক্টর ও অন্যান্য) এই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকবে।
২৯-৩১ মে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের ব্যক্তিগত গাড়িগুলো পার্কিংয়ের জন্য সাবাস বাংলাদেশ ও জুবেরী ভবনের মাঠ ব্যবহার করবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়ায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভর্তি পরীক্ষার দিনগুলোতে (২৯, ৩০ ও ৩১ মে) তাদের আবাসিক এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নগরীর কাজলা গেট ব্যবহার করতে পারবেন এবং আবাসিক এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে প্যারিস রোড হয়ে মেইন গেট এবং রোকেয়া হলের পেছনের রাস্তা (ফ্লাই ওভার সংলগ্ন) ব্যবহার করতে পারবেন বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষার সময়সূচি
আগামী ২৯ মে ‘সি’ ইউনিট (বিজ্ঞান), ৩০ মে ‘এ’ ইউনিট (মানবিক) এবং ৩১ মে ‘বি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১০টা, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা, বেলা ১টা থেকে ২টা এবং বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চার দফায় অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া ভর্তি-সংক্রান্ত যেকোনও তথ্য ও প্রযোজ্য শর্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাবে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দৈনিক আজকের খবর
Leave a Reply