বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বাঘায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলের চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম মোস্তাফাকে চাকরি থেকে বহিস্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নদী ইসলাম ও নদী খাতুন, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইসরাফিল হোসেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে ওই শিক্ষকের বিচার করা হবে বলে আশ্বাস দেন।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি আড়াইটার দিকে সহকারি প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা নবম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছিলেন। ওই সময় শিক্ষার্থীরা তাকে সুন্দরবন পিকনিকে যাওয়ার কথা বলেন। সেখানে বানরের আক্রমন বেশি জানিয়ে গোলাম মোস্তফা বেঞ্চে থাকা স্কুল ব্যাগ তুলে বিশেষ ভঙ্গিমায় বানরের ছোবলের বিষয়টি দেখানোর সময় এক ছাত্রীর ওড়নায় টান লেগে শরীর থেকে তার ওড়না সরে যায়। নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া তার নিজের মেয়ের মাধ্যমে এমন বিষয়টি জেনেছেন।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে গিয়ে শিক্ষককে মারধর করে লাঞ্চিত করেন। তারা বাঁশের লাঠি ও হকিস্টিক নিয়ে আক্রমন করেন বলে জানান এই শিক্ষক। আহত শিক্ষককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে শিক্ষক গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর অভিভাবক।
ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ অস্বিকার করে শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, ক্লাসে প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী ছিল। স্কুল ব্যাগ টেনে বানরের ছাবলের বিষয়টি দেখানোর সময় এক ছাত্রীর শরীরের ওড়না সরে যায়। এটাকে পূজি করে বহিরাগতরাসহ স্থানীয় কিছু শিক্ষার্থীরা মারধর করে আমাকে লাঞ্চিত করেছে। তাদের কাছে আমি নিরুপায় হয়ে পড়েছি।
তিনি জানান,ইতো পূর্বে এসএসসি শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে যেসব শিক্ষার্থীরা টাকা দেয়নি,তাদের এডমিট আটকায়ে টাকা আদায়ের কথা বলেছিল। তাতে রাজি না হওয়ায় কিছু শিক্ষার্থী আমার উপর আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল। সাদমান নামে দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জানান, বিদায় অনুষ্ঠানের টাকার বিষয় নিয়ে শিক্ষকের অভিযোগ সত্য নয়। তার ভাষ্য, ওই শিক্ষকের আচরন ভালো নয়।
প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, এডমিট আটকায়ে টাকা আদায়ের বিষয়টি আমিও নাকোচ করে দিয়েছি। পরের বিষয়টি নিয়ে এতো কিছু হবে জানা ছিলনা। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও চকরাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে বিচারের আশ্বাস দেওয়া সত্বেও কিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জমায়েত হয়ে মানববন্ধন করেছে। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বাঘা থানার এসআই কামরুজ্জামান বলেন, ছাত্রীর অভিভাবক শিক্ষক গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অশোভন আচরনের অভিযোগ দিয়েছেন।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দৈনিক আজকের খবর
Leave a Reply