অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের ভিত্তি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন; বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের সকল মূলনীতির প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োগ।
ইনশাআল্লাহ আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, যেখানে নিশ্চিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধি ও স্বনির্ভরতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদার রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতি ও ন্যায়পরায়ণতা।
১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাণী দিয়েছেন তারেক রহমান।
সংবাদমাধ্যমে পাঠানো সেই বানীতে এসব কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তারেক রহমান কলেছেন, গণতন্ত্র সম্পর্কে এবং এর অন্তর্নিহিত শক্তি উপলব্ধি করতে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর প্রচলিত একটি বিশেষ দিন ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। আত্মদানকারী শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের সমবেদনা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কালজয়ী দর্শন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মর্মমূলে ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র—যার ভিত্তি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার। এই চিন্তা ও দর্শনকে আপোষহীন সংগ্রামের নিরবচ্ছিন্ন পথচলায় অগ্রগামী করেছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গণআকাঙ্খায় প্রতিষ্ঠিত সেই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে বারবার হিংস্র আক্রমণে নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শাসকরা বহুমাত্রিক গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। দেড় দশক ধরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবিরাম সংগ্রামের পটভূমির ওপরে গত জুলাই মাসে ছাত্র—জনতার দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ইতিহাসের জঘন্যতম স্বৈরশাসনের পতন ঘটে।
তিনি আরো বলেন, এ বছরের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের মূল প্রতিপাদ্য- ‘গভর্নেন্স ও সিটিজেন এনগেজমেন্টের জন্য এআই নেভিগেট করা’, তথা সুশাসন ও নাগরিক অংশগ্রহণের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করা। এই থীম অত্যন্ত সময়োপযোগী। আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হলে প্রযুক্তির উৎকর্ষতাকে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার বাণীতে বলেন, বিগত ১৬/১৭ বছরে কোটি কোটি ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেয়া হয়নি। ভুয়া ভোটের জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করা হয়েছে।
দেশের কোটি কোটি ভোটার অর্থবহ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। দেশের কয়েক প্রজন্ম গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা ও প্রয়োগ ছাড়াই একটি ভীতিকর ও কতৃর্ত্ববাদী পরিবেশে বেড়ে উঠেছে। অপশাসনে সংকুচিত স্বাধীনতা ও সৃজনশীলতা তথা মানবিক ও মানসিক বিকশ ও প্রতিনিয়ত প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিনযাপন করতে হয়েছে। তরুণদের উজ্জল ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতকে নস্যাৎ করা হয়েছে। সবল ও শক্তিশালী গণতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য আমাদের এখনো অনেক দূর এগোতে হবে। কারণ এখনো বিশ্বের অধিকাংশ দেশে গণতন্ত্রের দুর্বলতা বিদ্যমান।
তারেক রহমান বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি ও আমার দল বিশ্বাস করে গণতন্ত্রের নীতিগুলো প্রচার ও সমুন্নত রাখার কোনো বিকল্প নেই। কারণ গণতন্ত্র হচ্ছে সর্বজনীন মূল্যবোধ যা জনগণের স্বাধীন ভাব প্রকাশ ও বাধাহীন চিন্তা প্রকাশের স্বীকৃতি প্রদান করে। আমরা এ ধরণের একটি নিরাপদ, প্রগতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ, যা রাষ্ট্রীয় সীমানা অতিক্রম করে বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক বিকাশে ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, আর তাই, ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের ভিত্তি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন; বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের সকল মূলনীতির প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োগ। ইনশাআল্লাহ আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, যেখানে নিশ্চিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধি ও স্বনির্ভরতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদার রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতি ও ন্যায়পরায়ণতা।