নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
‘আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সমাবেশ, এতে ইউনও ইনভল্প কিনা সন্দেহ আছে।’ রাজশাহী-১ (তানোর- গোদাগাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ফারুক চৌধুরী আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চত্তরে সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল উদ্দিন সোহেলের কর্মীর সমর্থকদের দেখে এই মন্তব্য করেন। এ সময় উপজেলা চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলামও এমপির পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন। তবে তিনি কোন মন্তব্য করেননি ওই সময়।
এমপির এ প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি সাংবাদিকদেরকেও বলেন, ‘বায়াস্ট হয়ে টাকা খেয়ে আপনি প্রশ্ন করেছেন।’
এ সময় সাংবাদিকরা এমপিকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তিনি সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন। পরে রাজশাহী থেকে আগত সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক এমপির এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে সমাবেশ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সদ্য গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল উদ্দিন সোহেল বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কয়েকশ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে তার আজকে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে যান। কর্মী-সমর্থকরা বিজয় উল্লাশ করতে করতে উপজেলা চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন। অন্যদিকে মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থিত হন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি দুপুর পৌনে একটার দিকে উপজেলা চত্বরে উপস্থিত হলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় এমপি সাংবাদিকদের ডেকে বলেন, আজকে উপজেলা চত্বরে অনেকগুলো লোক দেখছি, তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এখানে জড়ো হয়েছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে দুইবার ইউএনওকে ফোন করেছি কিন্তু তিনি আমার ফোন রিসিভ করেননি। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সমাবেশ, এতে ইউনও ইনভল্প কিনা সন্দেহ আছে।
এ সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন সাধারণ জনগণ জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আসতে পারেন কিনা। এমপি বলেন না আসতে পারেন না। সাংবাদিকরা আরেক প্রশ্ন করেন তাহলে আপনার সঙ্গে যে লোকজন আছেন তারা কারা? এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এমপি সাংবাদিকরা টাকা খেয়ে বায়াস্ট হয়ে প্রশ্ন করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
এ নিয়ে সাংবাদিকের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে এমপিকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য তারা ঘিরে ধরেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এমপি ফারুক চৌধুরী সেখান থেকে শটকে পড়েন। এরপর তিনি উপজেলা সভাকক্ষে গিয়ে মাসিক সমন্বয় সভায় অংশ নেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল বলেন, সাধারণ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এমপি যে ধরনের ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন, একজন জনপ্রতিনিধি এই ধরনের ধৃষ্টতা দেখাতে পারেন না। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, এমপি ফারুক চৌধুরী এর আগে একজন অধ্যক্ষকে পিটিয়েছিলেন। নানা কান্ডে তিনি এর আগেও গণমাধ্যমে শিরোনামে পরিণত হয়েছেন। তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ের ম্যানহোল থেকেও আওয়ামী লীগ কর্মী নয়নালের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।
সদ্য উপজেলা নির্বাচনের এমপি ফারুক চৌধুরী সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমগীর সমর্থন দিয়েছিলেন। তবে বেলাল উদ্দিন সোহেল এমপির বাইরে গিয়ে আলাদাভাবে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এতে বেলাল উদ্দিন সোহেলের প্রতি খুব ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন এমপি ফারুক চৌধুরী। এ নিয়ে আজ উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার ছড়িয়ে পড়ে।