বাঘা (রাজশাহী ) প্রতিনিধি -
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে রাজশাহীর বাঘায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ জুন। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিলো বৃহস্পতিবার (৯ মে) । বাঘা উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৯ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে, চেয়ারম্যান পদে ৩ জন,ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান (সংরক্ষিত) ৩ জন।
চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়া সব প্রার্থীই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু ছাড়াও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টু ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাঘা পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান পিন্টু।
ভাইস চেয়ারম্যান ( পুরুষ) পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান নিপ্পন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুকাদ্দেস আলী, কিশোরপুর মারকাজুস সুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রিন্সিপাল বাঘা পৌর মেয়র আক্কাস আলীর ভাগ্নে হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ মেহেদী হাসান (মিনার)।
ভাইস চেয়ারম্যান (সংরক্ষিত) পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাতেমা খাতুন লতা, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পাকুড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ফারহানা দিল আফরোজ রুমি ও গত নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী রিনা খাতুন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
অপরদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরও অবশেষে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত কে সম্মান জানিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৮৩ হাজার ৭ জন পুরুষ এবং মহিলা ভোটার ৮২ হাজার ৬৫৬ জন।
মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১২ মে। আর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ১৩ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি হবে ১৬ থেকে ১৮ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। ২০ মে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। আগামী ৫ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, নতুন নির্বাচনি বিধিমালা অনুযায়ী, মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণক জমা দিতে হয়েছে, উল্লেখ করতে হয়েছে টিআইএন নম্বরও। আগের বিধিমালায় নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। এক্ষেত্রে প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। সংশোধিত বিধিমালা এটি সংশোধন করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশের কম ভোট পেলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
সংশোধিত বিধিমালায় নির্বাচনি ব্যয়েও পরিবর্তন এসেছে। আগের আইনে ১ লাখ ভোটারের জন্য প্রার্থী ব্যক্তিগত ও নির্বাচনি ব্যয় করতে পারতেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা, ১ লাখ এক থেকে ২ লাখ ভোটারের জন্য ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ২ লাখের বেশি ভোটার সম্বলিত উপজেলার জন্য ১১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন।
নতুন উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় চেয়ারম্যান বা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনি ব্যয় বাবদ অনধিক ২৫ লাখ টাকা এবং ‘মহিলা সদস্য’ পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনি ব্যয় বাবদ অনধিক ১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন।
আগে ভোটগ্রহণের তিন সপ্তাহ আগে থেকে প্রার্থীরা প্রচারণায় অংশ নিতে পারতেন। এবার তা সংশোধন করে প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকে প্রচারণা শুরুর কথা বলা হয়েছে। প্রচার-প্রচারণার আওতায় এবার ডিজিটাল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও সন্নিবেশ করা হয়েছে।
অপরদিকে, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিধানও শিথিল করেছে ইসি। এতদিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে ২৫০ ভোটারের সমর্থন সূচক স্বাক্ষর মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে জমা দিতে হতো। এটি এখন একেবারেই তুলে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভোটারদের সমর্থন সূচক স্বাক্ষর লাগবে না।
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীরা সাদাকালোর পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ও ব্যানার করতে পারবেন। এছাড়া নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও পুনরায় ভোটের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে ইসির ক্ষমতা স্পষ্ট করা হয়েছে।