রাজশাহী প্রতিনিধি:বাঘা ও চারঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের
গত সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপন ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন নাট্যকার ও নির্মাতা শিমুল সরকার। আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিভিন্ন প্রেস মিডিয়াতে তিনি এ প্রতিবাদ লিপি প্রেরণ করেন। তার পাঠানো প্রতিবাদ লিপিতে তিনি বলেন "সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচার করে সম্মানহানি
ও আমার কৈফিয়ত :
আমি শিমুল সরকার, পেশায় নাট্য নির্মাতা, নাট্যকার, প্রযোজক এবং সংবাদ কর্মী। জাতীয় নির্বাচন ২০২৪ এর দিন গত ৭ জানুয়ারি রাতে আমার উপরে যে হামলা হয়েছে তা নিয়ে মিথ্যাচারে আমি হতবাক এবং ক্ষুব্ধ। একটি সংঘবদ্ধ ইমো হ্যাকার এবং মাদক কারবারী চক্র রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সরেরহাট বাজারে চাইনিজ কুড়াল, হাতুড়ি, লোহার রড নিয়ে আক্রমণ করে
আমাকে। মাথার পিছনে তিনটা কোপ দেয় তারা। এরপর ধস্তাধস্তিতে ৫ জনের সাথে পেরে না উঠে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে আমার সারা শরীরে হাতুড়ি, রড, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে। পাশেই ৫/৬ টি
বাইক নিয়ে তাদের ড্রাইভারেরা ফুল পিকাপ এবং হর্ণ এর সাউন্ড বাজাতে থাকে। যেন আমার চিৎকার শোনা না যায়। আমি
সম্পূর্ণ জ্ঞান অবস্থায় ছিলাম বলে ওদের সবাইকেই চিনে ফেলি। ওরা গালাগালি করছিল এবং বলছিল "ভাই এর সাথে পাঙ্গা নিস?" আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা আমার এক ভাতিজা সে দৃশ্য পুরোটা দেখেছে। অন্য দুই তিন জন অর্ধেক দেখেছে এবং পালিয়ে যাওয়ার সময় সবাইকেই চিনেছে। তারা আমার মোবাইল ফোনটাও নিয়ে যায় তাতে আমার
ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি হুমকির মুখে। তাদের এই ভাই টা কে ?
গত ২০২৩ এর জুন মাসে সে বিষয়ে ঢাকায় একটা সাধারণ ডায়েরি করে রেখেছিলাম আমার জীবন সংকটময় উল্লেখ করে।
সে-ই এই বাহিনীর গডফাদার যা পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবগত করা হয়েছে ঢাকায় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে।
এই বাহিনী পুরাটাই এবারের নির্বাচনে শাহরিয়ার আলম সাহেবের ভোট করেছে এবং ৭ তারিখে দেখে নিবে এমন কথা বহু স্থানে বলেছে। বলেছে ৫০ জনকে সাইজ করবে যার তালিকা করে রেখেছে। আমাকে মারার পর পার্শ্ববর্তী জোতরাঘ বাজারে অস্ত্র উঁচিয়ে শোডাউন করেছে। এরা প্রায় সবাই খুবই গরীব ঘরের সন্তান। কিন্তু অনেক দামী বাইক চালায় এবং
বেতনভোগী ড্রাইভারও রাখে। টাকার উৎস কি সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ খুঁজে বের করা।
আমি আমার মামলার
এজাহারে বা কোনো সাক্ষাতকারে বলিনি শাহরিয়ার আলম সাহেব আমাকে গুন্ডা দিয়ে মেরেছেন। আমি সেটা এখনও বিশ্বাস করতে চাই। কিন্তু এই চক্রটা প্রকাশ্যেই নৌকা এবং শাহরিয়ার আলম সাহেবের নাম বিক্রি করে দাপট দেখায়। কেন? কিভাবে?এবার আসি গতকালের (১৫ জানুয়ারি ) সংবাদ সম্মেলনের প্রসঙ্গে। বাঘা চারঘাটের কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করে বললেন, শিমুল সরকার এর উপর হামলা ব্যক্তিগত। এটুকু বলার অধিকার তারা রাখেন এটা আমিও মানি। কিন্তু এটা বললেন কেন- ফিল্ম
বানানোর জন্য আমি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে মেরে দিয়েছি? কোন ভিত্তিতে বললেন? প্রমান এবং চুক্তিপত্র দেখিয়েছেন সাংবাদিকদের? প্রমানটা করার দ্বায়িত্ব তাদের। আমি আগামি দুইদিন দেখবো। প্রমান করতে না পারলে আমার মানহানির
জন্য আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।
আমিও বিশ্বাস করতে চাই আমার উপরে হামলা নৌকার এজেন্ডা নয়। আর আমিও জামাত বিএনপি নই। মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একাধিক ক্রিয়েটিভ ভিজ্যুয়াল কাজ, একাধিক মন্ত্রণালয়ের এবং বঙ্গবন্ধু নিয়ে নানা কাজ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সেলের বহু ক্রিয়েটিভ কাজের সঙ্গে আমি এখনও জড়িত।
আমার ভাষ্য পরিষ্কার,
আপনাদের ব্যক্তিগত মাইর ব্যাপারটা মেনে নিলাম,
কিন্তু ভিত্তিহীন অভিযোগটা প্রমান করুন প্লিজ।
এটার সাথে নির্বাচন এবং দলীয় প্রার্থীর সম্পর্ক না থাকলে যারা আমাকে মেরেছে তারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, সহ সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতিও রয়েছে। তাদের বহিষ্কার করেছেন কি? কিংবা কোনো
পদক্ষেপ? এটার সাথে নির্বাচনের সম্পর্ক নেই আমি মানলাম, তাহলে এই আসামীদের ছাড়াতে, বাঁচাতে, জামিন করাতে স্থানীয়
জনপ্রতিনিধি এবং নেতারা কেন দৌড়ঝাঁপ করছেন? তাদের ব্যাপারে উপজেলা বা জেলা থেকে কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? এই গুন্ডা ইমো বাহিনীকে এলাকায় শেল্টার কে বা কারা দেয় খোঁজ নিয়ে তাদেরকে শাস্তি দিয়েছেন?
উত্তরগুলোর মাঝেই সব লুকিয়ে আছে। এদের ব্যবস্থা না নিলে স্থানীয় সাংসদের সম্মানহানি যে হচ্ছে সেটা বুঝেছেন কি? আমি কাঁচি প্রতীকের সাধারণ একজন সমর্থক ছিলাম, কর্মী না। আমি কর্মী হলে ঘরে বসে থাকার মানুষ না।
২০০৮ এর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে একজন কর্মী শিমুল সরকার বিরোধী মার্কাগুলোর জন্য কতটা টেনশানের কারন ছিল, সেটা তারাই জানেন বা বুঝবেন যারা হঠাৎ ভাইলীগ হননি শুধু স্বার্থের জন্য।
দেশের সমস্ত মিডিয়া এটা দেখতে বসে আছে। দেশের বড় বড় মিডিয়া সংগঠন আলটিমেটাম দিয়েছে। অপরাধীদের প্রথম
শাস্তি হোক স্থানীয় পর্যায়ের দলীয় ফোরাম থেকে। আর তাদেরকে শেল্টার দিতে গেলে অর্থ ভিন্ন দাঁড়াবে।
শিমুল সরকার
নাট্যকার, পরিচালক, প্রযোজক
প্রধান সম্পাদক বিনোদন প্রতিদিন ও বিনোদন স্পোর্টস।"