1. admin@doinikajkerkhabor.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাঘায় নানা আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপন ‎ চেয়ারম্যান থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান পাকিস্তানকে উড়িয়ে যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসন সংস্কারে প্রস্তাবনা জমা ‌দিয়েছে বিএনপি স্ত্রীর শাড়ি ছুড়ে ফেলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান রিজভীর বাঘায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা লাশটি বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর ৫ বছরে ৫ কোটি গাছ লাগাতে চান তারেক রহমান মানুষ এখন অনেক সচেতন, সামনে নির্বাচন এত সহজ হবে না: তারেক রহমান আড়ানী স্টেশন এলাকার রেলওয়ের সম্পত্তিতে থাকা দোকান উচ্ছেদ

ভোট বন্ধে খর্ব হচ্ছে ইসির ক্ষমতা

দৈনিক আজকের খবর ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩

আ.খ. নিউজ ডেস্কঃ
অনিয়মের কারণে ভোট বন্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা সীমিত করে ‘রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২৩’ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সংসদের বৈঠকে বিলটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আইনে এই সংশোধনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিলটি উত্থাপনে আপত্তি জানিয়ে জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম বলেন, ইসির ক্ষমতা খর্বের এই প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী। তবে তাঁর আপত্তি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে গত ২৮ মার্চ বিলটিতে নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

বিদ্যমান আইনে অনিয়ম বা বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের আশঙ্কায় নির্বাচনের যে কোনো পর্যায়ে ভোট বন্ধ করতে পারে নির্বাচন কমিশন। এই ক্ষমতা সীমিত করে শুধু ভোটের দিন ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা ইসির হাতে রাখা হয়। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের কোনো আসনের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে পুরো আসনের ভোটের ফল ঘোষণার পর স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি। যেসব ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হবে, শুধু সেসব (এক বা একাধিক) কেন্দ্রের ফল স্থগিত বা বাতিলের ক্ষমতা থাকছে ইসির হাতে।

এ ছাড়া মনোনয়নপত্রের সঙ্গে টিআইএন এবং ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের কপি জমা, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের শর্তে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের প্রতিশ্রুতির লক্ষ্যমাত্রা ২০২০ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০৩০ সাল করা এবং ভোটের সংবাদ সংগ্রহে থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের কাজে বাধা কিংবা যন্ত্রপাতি বিনষ্ট করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে।
বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১(এ) ধারায় বলা আছে, ‘নির্বাচন কমিশন যদি সন্তুষ্ট হয়, নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, ভীতি প্রদর্শন এবং চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে যুক্তিযুক্ত, ন্যায়সংগত এবং আইনানুগভাবে নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে না, তাহলে যে কোনো ভোটকেন্দ্র বা ক্ষেত্রমতো সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের যে কোনো পর্যায়ে ভোট গ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে।’

বিদ্যমান আইনের এই ধারা অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণার পর কমিশন তা স্থগিত বা বাতিল করতে পারে কিনা, তা নিয়ে মতদ্বৈততা রয়েছে। বিষয়টি স্পষ্ট করতেই এই বিধানের সঙ্গে আরেকটি উপধারা যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিল ইসি। কমিশন প্রস্তাবে বলেছিল, কোনো অনিয়ম, ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ এলে ইসি কোনো কেন্দ্র বা পুরো আসনের ভোটের ফল স্থগিত করতে পারবে। এরপর অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে কোনো কেন্দ্র বা পুরো আসনের ভোট বাতিল করে নতুন নির্বাচন দিতে পারবে।

ফলো করুন- 

তবে সংসদে উত্থাপিত বিলের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যেসব কেন্দ্রে (এক বা একাধিক) অভিযোগ থাকবে ইসি শুধু সেসব কেন্দ্রে ভোটের ফল স্থগিত বা বাতিল করে প্রয়োজনে নতুন নির্বাচন করতে পারবে।
এর পাশাপাশি ৯১ (এ) ধারায়ও সংশোধনী আনা হচ্ছে। সংশোধনীতে আরপিওর ৯১ ধারার এ উপধারায় ‘ইলেকশন’ শব্দের বদলে ‘পোলিং’ শব্দ প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিল উত্থাপনে আপত্তির সময় জাপার ফখরুল ইমাম বলেন, সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনতা দিয়েছে। কমিশন দায়িত্ব পালনে স্বাধীন থাকবে। এখন আইন করে স্বাধীনতাকে বাতিল করে দিলে তাহলে কমিশন কীভাবে স্বাধীন থাকবে?
আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে ফখরুল ইমাম বলেন, ‘গাইবান্ধার নির্বাচন খারাপ হয়েছিল বলে কমিশন বন্ধ করে দিয়েছিল। জানি না কী কারণে আইনমন্ত্রী আবার এখন আনলেন– নির্বাচন কমিশন পুরো নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে না। ভোটকেন্দ্র বন্ধ করতে পারবে, যেখানে গন্ডগোল হয়েছে সেটা বন্ধ করতে পারবে। মানে সেখানে স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ। নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে গাইবান্ধার মতো পুরো নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন, সেই অধিকার খর্ব করা হয়েছে।’

ফখরুল ইমাম বলেন, এই সংশোধনী সংবিধানের চেতনা ও গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নির্বাচনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নির্বাচন কমিশন যেভাবে প্রস্তাব দিয়েছে, সেভাবেই এই সংশোধনী পাস করা উচিত বলেও তিনি মনে করেন।

জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রস্তাবিত সংশোধনী সংবিধান বা গণতন্ত্রের পরিপন্থি নয়। বিদ্যমান আইনের ৯১(এ) ধারায় বলা আছে, কমিশন যদি দেখে কোনো নির্বাচনী এলাকায় সমস্যা, গন্ডগোল, ভোট দিতে বাধার ঘটনা ঘটছে, তাহলে পুরো নির্বাচনী এলাকার নির্বাচন ইলেকশন কমিশন বন্ধ করে দিতে পারে।
আইনমন্ত্রী বলেন, এখানে সংশোধনী হলো, কোনো একটি পোলিং সেন্টারে যদি গন্ডগোল দেখা দেয়; ধরেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় ১১৪টি পোলিং সেন্টার আছে। এর দুটো কি তিনটায় যদি গন্ডগোল, ধস্তাধস্তি, ভায়োলেন্স এগুলো হয়, তাহলে এই দুটো-তিনটায় নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারবে। কিন্তু এই দুটো-তিনটার কারণে ১১১টির নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতাটা দেওয়া হচ্ছে না। এটি গণতন্ত্রের পরিপন্থি নয়। কারণ যে ১১১টায় সঠিকভাবে নির্বাচন হয়েছে, যেখানে গণতান্ত্রিকভাবে জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে, সেটা নির্বাচন কমিশন বন্ধ করতে পারবে না। যদি বন্ধ করতে পারত, সেটা অগণতান্ত্রিক হতো। আইনমন্ত্রী দাবি করেন, এটি জনগণের কোনো অধিকার খর্ব করে না। এটি শূন্য ভাগও গণতন্ত্র ব্যাহত করে না। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত শক্ত ভীত স্থাপন করে।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ইলেকশন শব্দ দিয়ে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া বোঝায়। অর্থাৎ তপশিল ঘোষণা থেকে শুরু করে গেজেট আকারে ফল ঘোষণা পর্যন্ত সময়কে। আর পোলিং শব্দের অর্থ হলো শুধু ভোটের দিন। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন এখন শুধু ভোটের দিন অনিয়মের কারণে কোনো কেন্দ্র বা পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে। তবে ইলেকশন শব্দটি থাকলে ভোটের আগের পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইসি ভোট বন্ধ ঘোষণা করতে পারত। তাই এখানে তাদের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে।

অবশ্য কমিশনের কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, সংশোধনীতে ইসির ক্ষমতা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। এত দিন আইনের এই ধারাতে অস্পষ্টতা ছিল। এখন কোন কোন ক্ষেত্রে ইসি ভোট বন্ধ করতে পারবে, তা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার গতকাল সমকালকে বলেন, প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ইসির ক্ষমতা কমানো হচ্ছে। তাঁর মতে, ইসির ক্ষমতা প্রশ্নে প্রস্তাবিত সংশোধনী উচ্চ আদালতের রায়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। আদালতের রায় অনুযায়ী ভোটের ফলের পরও তদন্ত করে ইসি যে কোনো নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা রাখে। এখানে আরও কিছু অসংগতিও আছে। মনে হচ্ছে, কমিশন এখন শুধু ভোটের দিন ভোট বন্ধ করতে পারবে। এর আগে অনিয়ম বা ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই, এমনটা দেখলেও তারা ভোট আগেভাগে বন্ধ করতে পারবে না।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এই সংশোধনী পাস হলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হবে। নির্বাচনের তিনটি পর্যায়। এর একটি হলো ‘পোলিং’। পোলিং অর্থ ভোটের দিন বোঝায়। আর ইলেকশন অর্থ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত সময়কে বোঝায়। যদি আইনের ৯১(এ) অনুচ্ছেদে ‘ইলেকশন’ শব্দের বদলে ‘পোলিং’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা হয়, তাহলে ইসি শুধু ভোটের দিন ভোট বন্ধ করতে পারবে। আর ইলেকশন শব্দ থাকলে যে কোনো পর্যায়ে ইসি ভোট বন্ধ করতে পারবে। নির্বাচন কমিশন যদি নিজেরা এই সংশোধনী প্রস্তাব করে থাকে বা নিজেরা এর সঙ্গে সম্মত হয়, তাহলে তারা নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মারল।

প্রস্তাবিত আইনে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বে থাকা গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষকদের কাজে বাধা দিলে শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডের রাখা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে আইনমন্ত্রী জানান, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে মনোনয়নপত্র জমার সাত দিন আগে বিল পরিশোধের বদলে মনোনয়ন জমার আগের দিন পর্যন্ত  পরিশোধের বিধান করা, নির্বাচনকালে পেশিশক্তির প্রভাব প্রতিরোধ করা, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আয়কর সনদ জমা, গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই বিল আনা হয়েছে। বিলটি আইনে পরিণত হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।
সূত্র: সমকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

ফেসবুকে আমরা

আর্কাইভ

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দৈনিক আজকের খবর

প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park