নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুল জলিলের বদলির আদেশ হয়েছে। এখন তাঁর কার্যালয়ের একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে তড়িঘড়ি করা হচ্ছে। এ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। তবে ডিসি বলছেন, নতুন যে ডিসি আসবেন, তাঁকে ‘পেইন’ দিতে চান না। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়াটা এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নিয়োগটা দিয়েই তিনি রাজশাহী ছাড়তে চান।
ডিসি আবদুল জলিলের বদলির আদেশ হয়েছে গত ১২ মার্চ। তাঁর জায়গায় নাটোরের ডিসি শামীম আহম্মেদকে পদায়ন করা হয়েছে। এই বদলির আদেশ হওয়ার পরও নিয়োগ দিতে মরিয়া রাজশাহীর ডিসি আবদুল জলিল। রাতারাতি সম্পন্ন করা হচ্ছে নিয়োগ প্রক্রিয়া।
ওই আবেদনের সময় যেদিন শেষ হয়েছে, পরদিনই প্রার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্র। সাধারণত আবেদন করার পর যাচাই-বাছাই শেষে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রে তা না করে মাত্র পাঁচ দিন পরই পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চারজন অফিস সহায়ক এবং একজন করে নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তিন পদে মোট ছয়জন লোকবল নিয়োগের আবেদনের শেষ তারিখ ছিল গত ১৬ মার্চ।
সেদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, একটি কক্ষে কয়েকজন কর্মচারী আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করছেন। এরপর ১৭ ও ১৮ মার্চ শুক্র ও শনিবার হওয়ার কারণে ছুটি ছিল। পরদিন ১৯ মার্চ অর্থাৎ আবেদনের তারিখ শেষ হওয়ার ঠিক পরের কার্যদিবসেই চাকরিপ্রার্থীদের কাছে ডাকযোগে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়। এতে পরীক্ষার তারিখ উল্লেখ করা হয় ২৪ মার্চ।
১৬ মার্চ রাতে কথা হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক কর্মচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আবেদনের আজ শেষ দিন ছিল। এখানে যাচাই-বাছাই চলছে। অ্যাডমিট কার্ড ছাড়ার ব্যস্ততা চলছে। এখানে কত আবেদন পড়েছে দেখা যায়নি। তবে নিরাপত্তাকর্মী পদে আবেদন এসেছে ৪৫ জনের। পরিচ্ছন্নতাকর্মী, অফিস সহায়ক মিলে আরও ৮-১০টা হবে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব শরিফুল হক বলেন, ‘আমাদের লোকবলের সংকট আছে। অনেক আগেই আমরা ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করি। আগামী ২৪ তারিখে এই পরীক্ষার নিয়োগ দেওয়া হবে।’ নিয়োগে এত তড়িঘড়ি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনসেবা তো দ্রুতই দিতে হবে। দ্রুত দিলেও সমস্যা, না দিলেও সমস্যা।’
জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল এ বিষয়ে বলেন, ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনেক আগেই প্রকাশ করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে। আমি আসলে পরের ডিসিকে কোনো পেইন দিতে চাই না। তাই এগুলো সম্পন্ন করছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) এ এন এম মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণত কোনো জেলা প্রশাসক বদলির পর নিয়োগপ্রক্রিয়ায় থাকতে পারেন না। একজন জেলা প্রশাসক যথাযথভাবে কাজ করবেন, এটাই প্রত্যাশা। কয়েকজন সাংবাদিক আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি বিভাগীয় কমিশনারকে বিষয়টি জানাব।’