নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর বাঘায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে আরেক শীক্ষার্থীর পিতার বিরুদ্ধে।মারপিটে আহত শিক্ষার্থী শাহাদত হোসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীর পিতা আজ (বুধবার ) সকালে বাদি হয়ে অভিযুক্ত জয়নালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত শাহাদত হোসেন (১১) উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের দেবত্তর বিনোদপুর গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও জোতনসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
শিক্ষার্থী শাহাদতের মা সাথি বেগম জানান, প্রতিদিনের মত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি ) আমার ছেলেরা বিদ্যালয়ে যায়। বিদ্যালয় চলাকালীন সময় প্রথম শ্রেণির ছাত্রী জোতনসী গ্রামের জয়নালের মেয়ে খাদিজা'র সঙ্গে একই ক্লাসের আমার ছোট ছেলে মোহাব্বতের ঝগড়া হয়। ঝগড়ার বিষয়টি খাদিজার পিতা জানতে পেয়ে বিদ্যালয়ের টিফিন চলাকালীন সময়ে মোহাব্বতকে মারার জন্য বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। সে সময় সে মোহাব্বতকে না পেয়ে আমার আরেক ছেলে শাহাদত কে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি চড়থাপ্পড় দেয় এবং তুলে আছাড় মারে। এতে করে আমার ছেলে শাহাদত মারাত্মক আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ও কাঁদতে থাকে। এ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি ও কান্নাকাটি করে। পরে বিদ্যালয় থেকে আমাদের সংবাদ দেয়। সংবাদ পেয়ে আমরা ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করি। আমার ছেলেকে যে অন্যায়ভাবে মারধর করেছে তার বিচার চাই।
প্রধান শিক্ষক মোসা. আকতার বানু বেলী মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, ক্লাস শেষে টিফিনের বিরতি চলছিলো। শিক্ষার্থীরা খেলাকালিন সময়ে সবাই কিছু বুঝে উঠার আগেই জয়নাল স্কুল মাঠে প্রবেশ করে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে।আমরা শিক্ষার্থীকে রক্ষা করে পরিবারকে খবর দেই। তারা এসে ওকে নিয়ে যায়। পরে জানছি শাহাদত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষা অফিসারসহ ইউএনও স্যারকে অবগত করি। খবর পেয়ে শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ে এসে বিষয়টি শুনেন এবং ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম কে বিষয়টি সমাধানের জন্য দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান ওই অভিভাবকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মীর মো.মামুনুর রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে রিসিভ না হওয়ায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বাঘা থানার ডিউটি অফিসার এস.আই প্রজ্ঞাময় বলেন, শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওসি স্যারের নির্দেশনায় অভিযোগের তদন্তে ঘটনাস্থলে এসআই আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে পুলিশ যাবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আখতার বলেন, ঘটনাটি অবগত হয়েছি। আমি দাপ্তরিক জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকায় ঘটনাস্থলে যেতে পারিনাই। তবে বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং ওই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।