লঞ্চের কেবিন বুকিং নিয়ে হাতাহাতির ঘটনায় মৃত আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের আহাজারি। ছবি: সংগৃহীত
আ. খ. নিউজ ডেস্ক :
পটুয়াখালীতে লঞ্চের কেবিন বুকিং নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে আব্দুর রাজ্জাক নামে ওই লঞ্চের এক সুপারভাইজার মারা গেছেন। অভিযোগ উঠেছে, ওই লঞ্চের কেরানি মশিউর রহমানের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতিতে আব্দুর রাজ্জাক মারা যান।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে এমভি সুন্দরবন-১৪ লঞ্চে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লঞ্চের সুপারভাইজার মো. ইউনুচ এবং কেরানি মশিউরকে আটক করেছে পুলিশ।
আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
এদিকে আব্দুর রাজ্জাক মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শহরবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রাজ্জাককে হত্যা করা হয়েছে—এমন অভিযোগ এনে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন স্থানীয়রা। পরে লঞ্চঘাট চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে করা হয়। এতে বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. হাফিজুর রহমান, স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. রেজাউল করিম শোয়েব প্রমুখ।
রাজ্জাকের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন স্থানীয়রা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, এমভি সুন্দরবন-১৪ লঞ্চের কেবিন বুকিং নিয়ে লঞ্চের সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কেরানি মশিউর রহমানের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মশিউরের সঙ্গে রাজ্জাককে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে রাজ্জাক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আব্দুর রাজ্জাক কয়েক মাস আগে হার্টে রিং পরান এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
পটুয়াখালী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এস এম ফারুক বলেন, ‘ইউনুচের কথায় আমার ভাইরে মাইরা ফালাইছে মশিউর। ইউনুচের ইন্ধনে আমার ভাই রাজ্জাকরে মারছে। পটুয়াখালীতে মালিক আসলে এর সুরাহা হইবে। এ ঘটনার বিচার চাই।’
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সোলায়মান সালেহীন বলেন, ‘আব্দুর রাজ্জাক সাহেব সম্ভবত পথেই মারা যান। আমরা তাঁকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। কী কারণে মারা গেছে ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না।’
এ ব্যাপারে এমভি সুন্দরবন লঞ্চের পটুয়াখালীর কেবিন বুকিং ইনচার্জ মো. জাফর আহমেদ বলেন, ‘মশিউর ও রাজ্জাকের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে রাজ্জাক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যায় সে। এ ঘটনার সময় লঞ্চের সুপারভাইজার মো. ইউসুচ ভাই উপস্থিত ছিলেন।’
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত কেরানি মশিউর রহমান ও লঞ্চের সুপারভাইজার মো. ইউনুচকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।